বর্ণিল ক্যারিয়ারের ইতি টানতে যাচ্ছেন চট্টগ্রামের খ্যাতিমান কুস্তিগীর দিদার বলী। ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলায় আট বারের একক চ্যাম্পিয়ন ও চার বারের যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন দিদারুল আলম ওরফে দিদার বলী। ১০৮তম আসরের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক এ বলীখেলায় তার অংশগ্রহণের ১৭ বছর পূর্ণ হবে। আগামী ২৫ এপ্রিল লালদীঘি মাঠে অনুষ্ঠেয় এ বলীখেলাই তার জীবনের শেষ বলীখেলা।

 

দিদার বলী বলেন, ‘আমি এবারসহ ১৭ বছর ধরে খেলায় অংশগ্রহণ করছি। ১২ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এর মধ্যে ৮ বার একক চ্যাম্পিয়ন ও ৪ বার যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন। এবার শেষ অংশগ্রহণ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ১০৮তম আসরকে স্মরণীয় করে রাখতে চাই।’

 

এদিকে জীবনের শেষ বলীখেলায় দিদার বলীকে আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও বৈশাখী মেলা কমিটির পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হবে বলে জানা গেছে। মেলা কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী জানান, ‘২০১৭ সালেই দিদার বলীর শেষ খেলা। এজন্য তাকে কমিটির পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

 

মেলা কমিটির সম্মাননা বিষয়ে জানালে দিদার বলী বলেন, ‘এটি আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া হবে। এখানে টাকা-পয়সা বড় কথা নয়। আর তাদের এ রকম উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। এর ফলে নতুন-পুরনো অনেক বলীই অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ হবেন বলে আমি মনে করি। ভবিষ্যতেও যেন তাদের এ রকম উদ্যোগ অব্যাহত থাকে।’

 

গতবার সিলেকশন পদ্ধতির ফলাফল মেনে নিতে না পেরে রানার্সআপ ট্রফি গ্রহণ করার পর চলে যাওয়ার পথে সেটা মাটিতে আছড়ে মারেন দিদার বলী।

 

গতবার ট্রফি ভেঙে ফেলার বিষয়ে জানতে চাইলে দিদার বলী বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আসলে মঞ্চে থাকলে মাথা তখন ঠিক থাকে না। না বুঝেই কাজটি করে ফেলেছি। এটা করা মোটেও ঠিক হয়নি। ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখব।’

 

দিদার বলীর ট্রফি ভাঙা সম্পর্কে মেলা কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী বলেন, ‘এ খবরটা প্রথম শুনলাম। আমরা দেখিনি ও শুনিনি। যদিও সে করেও থাকে, তাহলে ভুল করেছে। তার কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা লিখিত আকারে কমিটিকে জানাতে পারত। হয়ত আবেগের বশবর্তী হয়ে এ ধরনের কাজ করে ফেলেছে।’

 

দিদার বলীর বিরুদ্ধে কোনোরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, এ ধরনের কোনো চিন্তাভাবনা নেই। পুরনো খেলোয়াড় হিসেবে তার জন্য সবকিছু উন্মুক্ত থাকবে। কারণ এবারই তার শেষ অংশগ্রহণ।’

 

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১০৭তম আসরে সিলেকশন পদ্ধতিতে নতুন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন টেকনাফের শামসু বলী। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত বলীখেলার ১০৬তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন রামু উপজেলার দিদার বলী। এ নিয়ে তারা দু’বার পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিলেন। প্রথমবার দিদার বলী চ্যাম্পিয়ন হলেও গতবার চ্যাম্পিয়ন হন টেকনাফের শামসু বলী।